চকরি নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না : প্রধানমন্ত্রী - হবে না কর্মী ছাটাই
জাতির উদ্দেশে ‘জনতা-কার্ফুর, আর্জি জানিয়ে বক্তৃতায় যা বলেছিলেন, সোমবার শিল্প মহলের সঙ্গে বৈঠকে সেই কর্মী ছাঁটাই না-করার কথাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আর কেন্দ্র যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে, তা স্পষ্ট করেই এই বার্তা কার্যকর করতে মাঠে নেমেছে শ্রম মন্ত্রক ও কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড দফতর (ইপিএফও)। করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে যাতে কোনও সংস্থার কর্মীর চাকরি না-যায়, সে জন্য পদক্ষেপ করতে সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছেন শ্রমসচিব হীরালাল সামারিয়া। লিখেছেন, এই সময়ে কারও বেতন যাতে ছাঁটাই না-হয়, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করতে চেষ্টার কথা। নথিভুক্ত সব সংস্থাকে একই আর্জি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে ইপিএফও-ও।
সামারিয়া লিখেছেন, বর্তমানে ভারত-সহ বিশ্ব যে সমস্যার মুখোমুখি, তার বিরুদ্ধে সকলে মিলে রুখে দাঁড়াতে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি সংস্থাকে আপাতত কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে না-হাঁটার পরামর্শ দিচ্ছে মন্ত্রক। বলছে বেতন ছাঁটাই না-করার কথাও। বিশেষত ঠিকা কর্মীদের। কেউ ছুটি নিলে বা সংস্থা বন্ধ রাখতে হলেও কর্মীদের বেতন যেন কাটা না-যায়। তাঁর অনুরোধ, নিজ নিজ রাজ্যের সব সংস্থার মালিক ও নিযোগকারীদের এই মর্মে চিঠি পাঠান মুখ্যসচিবরা।
টুইটে ইপিএফও-ও জানিয়েছে, কোনও কর্মীর কাজ বা বেতন ছাঁটাই না-করার আর্জি ইতিমধ্যেই সব সংস্থা ও মালিকদের জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিন ইপিএফে নথিভুক্ত সব সংস্থার কাছে তাদের আর্জি, এই সময়ে যাঁরা অসুস্থতা বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণে কাজে আসতে পারবেন না, তাঁদের কাউকে যেন ছাঁটাই না-করা হয়। কমানো না-হয় বেতনও। ইপিএফও-র মতে, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে এই মানবিক সিদ্ধান্ত। শ্রম সচিবের যুক্তি, এই সময়ে কাজ যাওয়া কিংবা বেতন ছাঁটাই শুরু হলে, কর্মীরা আর্থিক সঙ্কটে পড়বেন। মোদীও আজ শিল্পকে কর্মীদের বাড়িতে থেকে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলেন। করোনার প্রভাব যে কিছু দিন চলবে তা জানিয়ে তাঁর বার্তা, সংস্থাগুলি যেন কর্মীদের বিষয়টি মানবিকতার খাতিরে মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যবসায় বিরূপ প্রভাব পড়লেও যেন ছাঁটাই না-করে।
তলানিতে ঠেকা বৃদ্ধি আর রেকর্ড বেকারত্বে দেশের অর্থনীতির দশা এমনিতেই নড়বড়ে ছিল। তার উপরে করোনা রুখতে লকডাউনের জেরে ঝাঁপ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে বহু সংস্থা। দোকান বন্ধ থাকায় বিক্রি শিকেয়। এই অবস্থায় খরচ কমাতে বহু সংস্থা কর্মী বা তাঁদের বেতন ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে পারে বলে দানা বাঁধছে আশঙ্কা। যে কারণে ঝুঁকি নিয়েও অফিস যেতে রাজি অনেকে। কাজ অত্যাবশ্যকীয় তালিকায় না-থাকলেও।
সম্ভবত এই পরিস্থিতি আঁচ করেই মোদী এর আগে শিল্পকে কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছিলেন। অনুরোধ করেছিলেন কারও কাজ বা বেতন ছাঁটাই না-করতে। একই কথা বলেন বাড়িতে ঠিকা কাজের লোক, ব্যক্তিগত গাড়ির চালকদের সম্পর্কেও। কিন্তু এ দিনের উদ্যোগ থেকে স্পষ্ট যে, কেন্দ্র শুধু মৌখিক অনুরোধে আটকে থাকতে রাজি নয়। সংস্থাগুলির উপরে চাপ বজায় রাখতে চাইছে তারা।
Comments
Post a Comment